রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন

নোটিশ :
পথ নিউজে স্বাগত। আপনার প্রতিষ্ঠানের সংবাদ অথবা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন। ফোন: 01775816181

ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারে অংশ নিতেন মাছ ব্যবসায়ীও!

আলোর সংবাদ ডেক্স: দেশে ভুয়া চিকিৎসকের সংখ্যা নেহাত কম না হলেও এবারের খবরটি আরও ভয়াবহ। শুধু রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধতা ছিল এই দুর্বৃত্তায়ন। এই দুর্বৃত্ত মাছের ব্যবসায়ী হয়েও ডাক্তার সেজে ছুরি-কাচি নিয়ে ঢুকে পড়েছেন অপারেশন থিয়েটারে! পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় এমনই এক ভুয়া চিকিৎসকসহ আরও এক ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেফতার করছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া র‌্যাব অভিযান চালিয়ে মাছ ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল ওরফে মাছ মোস্তফা (৪০) এবং আমির হোসেন (৪৫) নামে আরেক ভুয়া চিকিৎসককে গ্রেফতার করে।

এদের মধ্যে মোস্তফা কামালা ওরফে মাছ মোস্তফার নিজের মালিকানাধীন ক্লিনিকে এবং আমির হোসেনকে অন্য একটি ক্লিনিক থেকে গ্রেফতার করা হয়।

মোস্তফা কামালা মঠবাড়িয়া উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে এবং আমির হোসেন নোয়াখালীর শাহাজাদপুর উপজেলার আবুল খায়ের মিয়ার ছেলে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার যৌথ অভিযান চালায় জেলা প্রশাসন ও র‌্যাব-৮। এরপর অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ওই ক্লিনিক মালিককে চিকিৎসক সেজে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার অপরাধে ৩ মাসের কারাদণ্ড ও ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দণ্ডিত ভুয়া চিকিৎসক মোস্তফা কামাল মঠবাড়িয়া পৌর শহরের মাছের আড়তের ব্যবসা করে আসছেন। ২০০৯ সালে তিনি শহরের হাসপাতাল সড়কে মহিমা ক্লিনিক নামে একটি হাসপতাল চালু করেন। ওই হাসপাতালে নিজেই মালিক আবার নিজেই চিকিৎসক সেজে সিজারিয়ান অপারেশন করে আসছিলেন। ক্লিনিকের বৈধ অনুমোদন না থাকলেও তিনি প্রভাবশালীদের মদদে ক্লিনিক পরিচালনা করছেন। তিনি ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক নিয়োগ না দিয়ে নিজেই প্রসূতি নারীর সিজারিয়ান অপারেশন করে আসছিলে। ইতি পূর্বে ক্লিনিকে কয়েক দফা প্রসূতি নারীর মৃত্যুসহ নানা দুর্ঘটনা ঘটে। এসব দুর্ঘটনা টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে মোস্তফা নিজেই মালিক নিজেই চিকিৎসক হয়ে রোগীদের ঝুঁকিতে ফেলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

পিরোজপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ কুমার চৌধুরী বলেন, ‘মোস্তাফা কামালের মালিকানাধীন মহিমা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারের মালিক নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। এমনকি তিনি নিজে প্রসূতি মায়ের সিজার অপারেশন করতেন। এ ছাড়া ভুয়া চিকিৎসক দ্বারা পরিচালিত হতো ক্লিনিকটি।’

পীযুষ কুমার চৌধুরী আরও বলেন, ‘ক্লিনিকের অপারেশন থিয়েটারটি নামমাত্র। সেটি বসবাসের জায়গা হিসেবে ব্যবহার হতো। অভিযান চালিয়ে সেখানে বিপুল পরিমাণ মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধও পাওয়া গেছে।’

এদিকে মাছ ব্যবসায়ী মোস্তফা কামালের বিষয়ে প্রশাসনকে তথ্য দেন অপর ভুয়া চিকিৎসক আমির হোসেন ভূইয়া। কামালের আগে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। তার দেওয়া তথ্য মতে, মহিমা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালায় র‌্যাব।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ কুমার চৌধুরী জানান, স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে মঠবাড়িয়া উপজেলার সাফা বন্দরে হাজী আবদুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিকে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ভুয়া চিকিৎসক আমিন হোসেন ভূইয়াকে আটক করা হয়। ভুয়া সনদপত্র দেখিয়ে ওই হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার পদে চাকরি নিয়েছিল আমির হোসেন।

তিনি আরও জানান, এএইচ ভূইয়া (সুজন) নাম ধারণ করে আমিন হোসেন ভূইয়া গাইনোকোলজিস্ট হিসেবে রোগী দেখার পাশাপাশি সিজারসহ বিভিন্ন অপারেশন করে আসছিলেন। পাশাপাশি মঠবাড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে ‘অন কল’ চিকিৎসক হিসেবে অপারেশন করতেন তিনি। এই ভুয়া চিকিৎসককে আটকের পর তার দেওয়া তথ্য মতে মহিমা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়ে মোস্তফা কামালকে আটক করা হয়।

এদিকে অপরাধ স্বীকার করে নেওয়ায় আমির হোসেনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও হাজী আবদুর রাজ্জাক সার্জিক্যাল ক্লিনিককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ কুমার।

সংবাদটি শেয়ার করুন:


আর্কাইভ

FriSatSunMonTueWedThu
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
     12
24252627282930
31      
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  
       

 

© All rights reserved © 2025 Pathnews.net 
Design & Developed BY Hostitbd.Com